ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৮/০৯/২০২৪ ৯:৪১ এএম

বিরোধীদের নিষ্ক্রিয় করতে সম্প্রতি মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনদের হত্যা ও গ্রেপ্তারের হার বৃদ্ধি করেছে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয়।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন হাই কমিশনারের কার্যালয়ের শীর্ষ নির্বাহী ভলকার তুর্ক। জান্তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বা সরাসরি নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন— এমন শতাধিক মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল করার পর থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার ৩৫০ জন বেসামরিক নারী, পুরুষ এবং শিশু।

এদের মধ্যে ২ হাজার ৪১৪ জন নিহত হয়েছেন ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের জুনের মধ্যে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের দমন করতে এই সময়সীমায় দেশজুড়ে ঘন ঘন বিমান হামলা চালিয়েছে মিয়ানমারের বিমান বাহিনী। যে ২ হাজার ৪১৪ জন নিহত হয়েছেন, তাদের ৫০ শতাংশেরই প্রাণহানি ঘটেছে এসব বিমান হামলায়।

হত্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গ্রেপ্তারও বাড়িয়েছে জান্তা। জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মধ্যে গত কয়েক মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ হাজার জনকে।

এই গ্রেপ্তারদের মধ্যে শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক, তরুণ-তরুণী, বয়স্ক— সব ধরনের মানুষজন রয়েছেন। কারাগারে এই বন্দিদের অভুক্ত রাখা, বাঁশের লাঠি কিংবা মোটর সাইকেলের চেন দিয়ে পেটানো, কারাকক্ষে বিষাক্ত সাপ-পোকামাকড় ছেড়ে দেওয়ার মতো অমানুষিক নির্যাতন করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয়ের মুখপাত্র লিজ থ্রসেল রয়টার্সকে জানান, জান্তা শাসনামলের গত তিন বছরে যারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এসেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ৮৫৩ জন কারাগারেই মারা গেছেন। এই মৃতদের মধ্যে ৮৮ জন শিশুও রয়েছে।

“এই নিহতদের বেশিরভাগই জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভয়াবহ নির্যাতন, প্রয়োজনীয় খাবার ও চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন,” বলেন লিজ থ্রসেল।

২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভুত্থানে নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধানও তিনি।

অভ্যুত্থানের পরপরই বন্দি করা হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচিকে। এখনও কারাগারে রয়েছেন সুচি।

সূত্র : রয়টার্স

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার জান্তা প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের সামরিক শাসক মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা ...

চীনের মধ্যস্থতা: মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বিদ্রোহীরা

মিয়ানমার–চীন সীমান্তে এক বছর ধরে চলা লড়াইয়ের পর মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত শক্তিশালী ...

ঘুমধুম ইউপি’র প্যাড-ভুট্রো মেম্বারের প্রত্যয়নে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু পাচার

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চোরাচালানের অভয়ারণ্য ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে পাচার করে আনা অবৈধ গরু-মহিষের ...